গোপাল সিং, খোয়াই, ০১ মার্চ || অনর্গল কান্না মায়ের। এবছর সিবিএসই পরিচালিত মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসা হলো না মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছেলে বাপন দেবের। কারণ আজ ছিল হিন্দি পরীক্ষা। কিন্তু সে ছিল বাংলা মিডিয়ামের ছাত্র। স্বাভাবতই তার একটি বছর পিছিয়ে গেল। এক দরিদ্র পরিবারের একমাত্র সন্তানের সাথে ঘটে যাওয়া এমন অযাচিত ঘটনায় খোয়াইতে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, শুক্রবার ছিল সিবিএসই পরিচালিত মাধ্যমিকের হিন্দি পরীক্ষা। খোয়াই মহকুমার রামচন্দ্রঘাট বিধানসভার লালটিলার ডিরোজিও মিশন স্কুলের ছাত্র বাপন দেব মুলত জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ে যায় পরীক্ষা দিতে। যদিও সে বাংলা বিভাগের ছাত্র। কিন্তু পরীক্ষা হলে গিয়ে সে জানতে পারে আজ ছিল হিন্দি বিষয়ক পরীক্ষা। কিন্তু বিষয়টি জানার পর সে স্কুল থেকে বাড়িতে চলে এসে পরিবারকে ঘটনাটি জানায়। এমন ঘটনার খবর পেয়ে বাপনের মা-বাবা মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন। তাদের অভিযোগ, মাত্র ৫ মাস আগে ৫০-৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে খোয়াই জাম্বুরার বনেদি বেসরকারি ডিরোজিও মিশন স্কুলে বাপনকে ভর্তি করিয়েছিলেন। কিন্তু আজ যে ঘটনা ঘটল, এরপর স্কুল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বললে তারা বিষয়টিকে নিয়ে যে বিবরণ দিয়েছে তাতে বাপনের জন্য কোনো সুরাহার পথ ছিল না। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি যে, তাদের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। বাপনের হিন্দি বিষয় ছিল। রেজিস্ট্রেশনের সময় সব কিছু ভেরিফিকেশন করা হয়েছে ছাত্র ও অভিভাবকের উপস্থিতিতেই। স্কুল থেকেই এডমিট কার্ডের জন্য আবেদনপত্র জমা নেওয়া হয়েছিল। এডমিট কার্ডেও আজ হিন্দি বিষয় ছিল বলে উল্লেখ রয়েছে। তাছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্রে বিষয়টি জানার পর সাথে সাথে ইনভিজিলেটরের সাথে সমস্যা নিয়ে কোনো কথা বলেনি বাপন। হয়তো তারা কোনো ব্যবস্থা করতে পারতেন বলেও অভিমত ব্যক্ত করলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কাউকে কিছু না বলেই পরীক্ষা কেন্দ্র ত্যাগ করে বাড়ী ফিরে যায় বাপন। যদিও পরবর্তী সময় স্কুল কর্তৃপক্ষের সাথে সাক্ষাৎ করে বাপন ও তার পরিবার। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। গোটা একটি বছর নষ্ট হয়ে গেল বাপনের। সে এক দরিদ্র পরিবারের ছেলে। ৫০-৬০ হাজার টাকার ভর্তুকি দিয়ে পুনরায় বাপনের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে তো এই দরিদ্র পরিবারটি? প্রশ্ন জনমনে।