পার্বত্য চট্টগ্রামের সংঘাত বন্ধে ত্রিপুরায় সচেতন জনজাতির লিপলেট প্রচার

আপডেট প্রতিনিধি, আগরতলা, ০৯ জুলাই || পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়ে ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় লিপলেট বিতরণ করলো ‘ত্রিপুরার সচেতন জনজাতি’ নামে একটি সংগঠন। রাজ্যের দক্ষিণ, উত্তর ও ধলাই জেলার অন্তর্গত শিলাছড়ি, নতুন বাজার, যতনবাড়ি, তৈচাকমা, করল্যাছড়ি, নন্দন নগর, চানমারি, নাগিছড়া ও অভয়নগরসহ একাধিক এলাকায় এই প্রচার চালানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইজিরা ও রামভদ্র এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়ও এই লিপলেট পোস্টার আকারে লাগানো অবস্থায় দেখা গেছে। এতে পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন ধরে চলা আদিবাসী-নিযারতন ও ভ্রাতৃঘাতী সহিংসতার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
লিপলেটে স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে, “আমরা, ত্রিপুরার সচেতন চাকমা, মগ (মারমা) ও ত্রিপুরা জনগণ, পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত বন্ধে ত্রিপুরা, মিজোরাম ও অরুণাচলে বসবাসরত সকল জনজাতির প্রতি জরুরি আহ্বান জানাচ্ছি।”
তাদের অভিযোগ, ১৯৯৭ সালের পার্বত্য শান্তিচুক্তির পর থেকে জেএসএস (সন্তু গ্রুপ) দমনমূলক ও বিভাজনমূলক কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে বহু নিরীহ নেতা-কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের সমাজে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। গণতান্ত্রিক আদর্শের পক্ষে থাকা ইউপিডিএফ ও অন্যান্য পক্ষ বহুবার সংলাপের প্রস্তাব দিলেও জেএসএস তা উপেক্ষা করে বারংবার সহিংসতা চালিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করা হয়।
লিপলেটে আরও উল্লেখ করা হয়, “এই সংঘাতের ফলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছে বাংলাদেশ সরকার, সেনাবাহিনী ও বাঙালি মুসলিম সেটলাররা। অথচ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পার্বত্য অঞ্চলের আদিবাসী সমাজ।”
সংগঠনটির পক্ষ থেকে পাঁচ দফা আহ্বান জানানো হয়েছে—

১. জেএসএস সন্তু গ্রুপের প্রতি সমস্ত প্রকার সমর্থন প্রত্যাহার,

২. ভ্রাতৃঘাতী কর্মকাণ্ডের জন্য তাদের জবাবদিহি দাবি,

৩. সংলাপ ও সহাবস্থানের পথে এগিয়ে যাওয়া,

৪. ভারতে জেএসএস নিষিদ্ধ করার দাবি,

৫. ত্রিপুরা, মিজোরাম ও অরুণাচলে জেএসএস সদস্যদের সামাজিকভাবে বয়কট ও বহিষ্কার করা।

লিপলেটের শেষে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়, “ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত অব্যাহত থাকলে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী জনগোষ্ঠী বিলুপ্তির পথে ধাবিত হবে। তাই এখনই সময় ঐক্যবদ্ধভাবে এই সংকট মোকাবিলা করার।”
এই লিপলেট প্রচারকে ঘিরে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে জনমনে আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রশাসন এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি।

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*