ত্রিপুরায় স্বাস্থ্য পরিষেবার নতুন দিগন্ত — জিবি হাসপাতালে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও টেলিমেডিসিন পরিষেবা উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা

আপডেট প্রতিনিধি, আগরতলা, ০৩ নভেম্বর || আগরতলা জি.বি. হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরিষেবার নতুন দিগন্তের সূচনা। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজের সি.সি.বি (Care and Nursing Care Block), সি.ডি.সি (Communicable Disease Centre) ও ২০ শয্যার স্পেশাল ওয়ার্ডের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। একই সঙ্গে দিল্লির এইমসের (AIIMS) সঙ্গে টেলিমেডিসিন পরিষেবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ যাতে দেশের প্রথম দশের মধ্যে স্থান পায়, সেই লক্ষ্যে সরকার নিরলস প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তবে সরকারের একার পক্ষে তা সম্ভব নয় — চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও সাধারণ মানুষ সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।”
তিনি আরও জানান, বর্তমানে রাজ্যে রেফার করার সংখ্যা অনেকটাই কমেছে, তবে চিকিৎসক ও রোগীদের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করতে পারলে সেই সংখ্যা আরও কমানো সম্ভব। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা চাই কোনো রোগী রাজ্যের বাইরে চিকিৎসার জন্য রেফার না হন।”
ডাঃ সাহা জানান, ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সুপার স্পেশালিটি ব্লকে বর্তমানে ৯টি বিশেষ পরিষেবা চালু হয়েছে, শীঘ্রই আরও ৪টি সুপার স্পেশালিটি পরিষেবা চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া আগামী ৫ নভেম্বর মনিপুরের সৃজা হাসপাতাল-এর ভূমিপূজা হবে, যা রাজ্যে সুপার স্পেশালিটি চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করবে।
তিনি আরও বলেন, “রাজ্যে বর্তমানে এমবিবিএস আসন সংখ্যা ৪০০। ভবিষ্যতে ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজে আরও ৫০টি আসন বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।” টেলিমেডিসিন পরিষেবার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, দিল্লির এইমসের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে সরাসরি রোগীদের কথা বলার সুযোগ তৈরি হবে, এর জন্য বিশেষ স্টুডিও স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গীত্তে, ওএনজিসি-র অ্যাসেট ম্যানেজার সঞ্জীব কুমার জানজুয়া, পার্ক অ্যান্ড গার্ডেন সোসাইটির সিইও প্রসাদ আর. রাও, স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ তপন মজুমদার, আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডাঃ অনুপ কুমার সাহা, মেডিকেল এডুকেশন অধিকর্তা ডাঃ এইচ. পি. শর্মা সহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
উল্লেখ্য, ওএনজিসির আর্থিক সহায়তায় জি.বি. হাসপাতালে নির্মিত হচ্ছে কেয়ারনেস কেয়ার ব্লক, কমিউনিকেটেবল ডিজিজ সেন্টার ও ২০ শয্যার স্পেশাল ওয়ার্ড— যার মোট ব্যয় প্রায় ৩৪ কোটি টাকা। এছাড়া বনদপ্তরের পার্ক অ্যান্ড গার্ডেন সোসাইটি-র উদ্যোগে জি.বি. হাসপাতালের চত্বর সাজিয়ে তোলার কাজও চলছে।
সব মিলিয়ে, রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়নে আজকের এই উদ্যোগকে “নতুন মাইলফলক” বলে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা।

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*