খোয়াই বিদ্যুৎ দপ্তরের খামখেয়ালীপনায় লক্ষ লক্ষ টাকার অত্যাধুনিক ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন ১৪ মাস যাবত পড়ে রয়েছে জেলা হাসপাতালের অন্ধকার ঘরে

el khwগোপাল সিং, খোয়াই, ২২ সেপ্টেম্বর ।। খোয়াই বিদ্যুৎ দপ্তরের উদাসীনতায় ভোগান্তীর স্বীকার দেড় লক্ষাধিক জনগন। আজ প্রায় ১৪ মাস যাবত রামচন্দ্রঘাট, আশারামবাড়ী সহ দেড় লক্ষাধিক জনগনের জন্য বর্তমান সময়ের আধুনিক ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন খোয়াই জেলা হাসপাতালের একটি কক্ষে ধূলো-বালিতে পড়ে বিনষ্ট হচ্ছে। কিন্তু বিদ্যুৎ দপ্তরের সাথে এর যোগাযোগ কোথায়? প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক। এর পেছনে বিদ্যুৎ দপ্তরের চূড়ান্ত খামখেয়ালি যে রয়েছে তার প্রমান মিলল জেলা হাসপাতাল থেকেই। জানা যায় অত্যাধুনিক এই এক্স-রে মেশিনটি চালু করতে গেলে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ট্রান্সফর্মার লাগবে। সেই মোতাবেক উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ট্রান্সফর্মার বাবদ আট লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা জমা দিতে হবে বলে জানিয়ে দেয় বিদ্যুৎ দপ্তর। অথচ খোয়াই জেলা হাসপাতাল চত্বরেই ২-৩ খানা ট্রান্সফর্মার বসানো রয়েছে। তারপরও বিদ্যুৎ দপ্তর তা মানতে নারাজ। বরং বিদ্যুৎ দপ্তর থেকে জ্ঞান দেওয়া হয় যে, আমরা ট্যাকনিকল ব্যাপারটা ভাল বুঝি, আর আপনারা স্বাস্থ্য সম্পর্কে। সুতরায় টাকা দিতে হবেই। দীর্ঘ ১০ মাস দপ্তরে দপ্তরে চিঠি লেখালেখি চলতে থাকে। তারপর বাধ্য হয়ে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর ৪ মাস পূর্বে টাকা জমা দেন এবং অনুরোধ করেন যাতে দ্রুত লাইন চালু করে খোয়াইয়ের জনসাধারনকে পরিষেবা দেওয়া যায়। কিন্তু টাকা পাওয়ার পরেও ৪ মাস কেটে গেছে কিন্তু বিদ্যুৎ দপ্তর লাইন চালু করেনি। এদিকে জনগনের অভিযোগ বেসরকারীভাবে ডিজিটাল এক্স-রে করতে গেলে প্রচুর টাকা দিতে হয়, যার কোন দর নেই। এক্স-রে বাবদ যেমন খুশি তেমনভাবে জনগনের কাছ থেকে অর্থ আদায় করা হচ্ছে। খোয়াই শহরে ৩-৪ খানা ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন রয়েছে। তবে খোয়াই জেলা হাসপাতালের ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন চালু না করার পেছনে কোন দূর অভিসন্ধি রয়েছে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন জনসাধারন। নয়তো কেন ১৪ মাস যাবত লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে ক্রয় করা আধুনিক ডিজিটাল এক্স-রে মেশিনপড়ে থাকবে অন্ধকার ঘরে ধূলোবালির মধ্যে? প্রশাসন কি জেগে ঘুমাচ্ছে নাকি এর পেছনে অন্য কোন রহস্য রয়েছে এনিয়েই জনমনে ব্যপক গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়েছে।  কারন জনগনের মতে খোয়াই প্রশাসনের একাংশ আমলা-কর্মচারীগন একজোট হয়ে প্রশাসনিক কাজকর্ম লাটে তুলে নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধি করায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। একদিকে যেমন জেলার উন্নয়ন এবং রাজনৈতিক দলকে বেকায়দায় ফেলার চক্রান্ত করছে অন্যদিকে একটি সরকারের উপর জনগনের ক্ষোভ বাড়িয়ে ভাবমূর্ত্তি নষ্ট করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। যে যেমনভাবে নিজেদের মর্জিমাফিক কাজকর্ম করছেন। খোয়াই এলাকার কিছু উন্নয়নমুলক কাজের মাষ্টার প্ল্যান তৈরী করে রেখেছিলেন প্রয়াত বিধায়ক সমীর দেবসরকার। বর্তমানে নানান অজুহাতে প্রশাসনিক কাজকর্ম একদম লাটে তুলে আগামী মার্চ মাসকে সামনে রেখে বিভিন্ন উন্নয়নমুখী কাজের প্ল্যান থেকে কিভাবে এডজাষ্টম্যান্ট করে অর্থ কামাই করা যায় সেদিকেই এখন প্রশাসনের একাংশ আমলা-কর্মচারীগন একজোট হয়ে মনোনিবেশ করেছেন। কারন কি কি মাষ্টার প্ল্যান করা হয়েছিল এবং কোথায় কিভাবে করার কথা তা বর্তমানে একাংশ আমলা-কর্মচারীগন ছাড়া অন্য কেউ জানে বলে মনে করছেন না জনসাধারন। বিশেষ করে পূর্ত্ত দপ্তর, কৃষি দপ্তর, উদ্যান ও ভুমি সংরক্ষন দপ্তর, ব্লক সহ অন্যান্য দপ্তরগুলিতে রাত-দিন চলছে নীল নক্সা তৈরীর কাজ। অতি সত্বর চিহ্নিত করে যদি ঐসকল আমলা-কর্মচারীদের আটকানো না যায় তবে খোয়াই জেলায় সরকারী দপ্তরগুলোতে অরাজকতা সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন তথ্যভিজ্ঞ মহল। সুতরাং সময় নষ্ট না করে দ্রুত লাগাম টানা হউক, এমনটাই দাবি জনগনের।

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*