সাগর দেব, তেলিয়ামুড়া, ০৩ আগস্ট || উদ্বেলিত জনসমাগমকে সাক্ষী রেখে আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বারোদগঠন হলো কল্যাণপুর কমিউনিটি হেল্থ সেন্টারের। পূর্ব নির্ধারিত সুচি অনুযায়ী কল্যাণপুর নতুন মোটর স্ট্যান্ডস্থিত সোনার তরী মুক্তমঞ্চের সামনে অনুষ্ঠিত হয় এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা কল্যাণপুর পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান সোমেন গোপের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রথমেই আলোচনা করেন স্থানীয় বিধায়ক পিনাকি দাস চৌধুরী। শ্রী চৌধুরী কল্যাণপুর কমিউনিটি সেন্টারের উদ্বোধনকে ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে ঘোষণা করেন
পাশাপাশি তিনি বলেন, একটা সময় দীর্ঘ বাম জমানায় কল্যাণপুরের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ছিল এক প্রকার জরাজীর্ণ, বারবার কল্যাণপুরের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মান উন্নয়নের দাবি উঠলেও বাম জমানায় এই দাবি উপেক্ষিত ছিল বলে এদিন আলোচনা করতে গিয়ে উল্লেখ করেন বিধায়ক পিনাকি দাস চৌধুরী। এর পাশাপাশি পিনাকী দাস চৌধুরী এই সময়ের মধ্যে গোটা কল্যাণপুরের বিভিন্ন জায়গায় আর্থ সামাজিক ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে বলে দাবি করেন।
উদ্বোধনী মঞ্চে কল্যাণপুর ব্লক এলাকার তিনটি বিদ্যালয়কে কোভিড টিকাকরনের ক্ষেত্রে ১০০% সফলতার জন্য বিশেষভাবে পুরস্কৃত করা হয়। এই তিনটি বিদ্যালয় হচ্ছে গয়াংফাং উচ্চ বিদ্যালয়, ঘিলাতলী বাজার দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয় এবং রতিয়া দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়।
উদ্বোধনী মঞ্চে আলোচনা করতে গিয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিক রাঁধা দেববর্মা আজকের এই দ্বারোদঘাটনের বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি আগামী দিন স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়নে স্বাস্থ্য দপ্তর সদর্থক ভূমিকা পালন করবে বলে দাবি করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আলোচনা করতে গিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা আজকের এই দিনটাকে ঐতিহাসিক বলে আখ্যায়িত করেন। পাশাপাশি তিনি এটাও বলেন ঘটা করে উদ্বোধন করলেই হবে না সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই হাসপাতালের পারিপার্শ্বিক পরিমণ্ডলকে পরিচ্ছন্ন রাখার আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা। আলোচনা প্রসঙ্গে?মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অনেক জায়গায় কোন কোন সময় একাংশ এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর এই সমস্ত ঘটনাগুলোকে অনাকাঙ্ক্ষিত আখ্যা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা এই সমস্ত ঘটনা যাতে সংগঠিত না হয় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। এই উদ্বোধনী আলোচনা করতে গিয়ে গোটা এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের পরিসংখ্যা তুলে ধরা কবে দিবে সাজানোর ব্যাপারে পরিকল্পনামাফিক উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে কল্যাণপুরে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। কল্যাণপুরে দাঁড়িয়ে স্বাস্থ্যকে বিশেষ ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করে রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্র সরকারের যৌথ উদ্যোগে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নতি সাধন করা হবে বলে দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। হাসপাতালের উদ্বোধনী মঞ্চে আরো একবার নেশা মুক্ত ত্রিপুরা গড়ার আহবান করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা। তিনি বললেন, রাজ্যকে প্রকৃত অর্থে এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা হিসেবে গড়ে তুলতে গেলে নেশা মুক্ত রাজশাহী গড়ে তুলতে হবে আর এক্ষেত্রে সকলকেই এগিয়ে আসার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা।
উল্লেখ্য নির্ধারিত সময়ের প্রায় আড়াই ঘন্টা পর আয়োজিত হয় কল্যাণপুরের উদ্বোধন অনুষ্ঠান , এই দেরির জন্য প্রকাশ্য সভা মঞ্চ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা ।
এরপর মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য সম্মানিত অতিথিবর্গদের সম্মিলিত অংশগ্রহণের মাধ্যমে নবনির্মিত হাসপাতালের উদ্বোধন কার্য সম্পন্ন হয়। প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে এই হাসপাতাল এবং কোয়ার্টার কমপ্লেক্সের কাজ সম্পন্ন হয়। দীর্ঘদিন পর কল্যাণপুর হাসপাতালের নব নির্মিত পাকা ভবনের দ্বারোদঘটন সম্পূর্ণ হওয়ায় সর্বত্রই এক অনাবিল খুশির আবহ।