গোপাল সিং, খোয়াই, ০৫ অক্টোবর || রবিবার মুহুর্তেই কিছু অত্যুৎসাহীর হাত ধরে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয় ‘সাধুর বেশে সন্ত্রাসী আটক খোয়াই থানায়’! কিন্তু অনুসন্ধান করতে গিয়ে সামনে এলো প্রকৃত সত্য। ধৃত ৮ সাধু হলেন ‘সনাতন রক্ষা দল’-এর সদস্য।
জানা যায়, খোয়াইয়ে চিরাচরিত শান্তির বার্তা হাতে নিয়ে ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে বেরিয়েছিলেন নাগপুরের কয়েকজন সাধু। তাঁদের পরনে গেরুয়া বসন, গলাভর্তি রুদ্রাক্ষ, ঠোঁটে শুধু ভগবানের নাম। তাদের কাজই হচ্ছে ঘুরে ঘুরে রুদ্রাক্ষ বিক্রি করা। কিন্তু সেই পবিত্র পথে হঠাৎই নামল এক অপ্রত্যাশিত ঝড়—খোয়াই পুলিশ প্রশাসন ও গোয়েন্দাদের হাতে তাঁরা আটক হলেন সীমান্তবর্তী এলাকায়। স্থানীয়রা জানায়, ওই সাধুরা গ্রাম থেকে গ্রামে ধর্মীয় উপদেশ ও সনাতন ধর্মের শিক্ষা ছড়িয়ে দিচ্ছিলেন। হঠাৎই “ভুল সংবাদ”-এর ভিত্তিতে তাঁদের সন্দেহভাজন হিসেবে ধরে থানায় নিয়ে যায় প্রশাসন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ চলে—তাঁরা কবে এসেছেন, কেন এসেছেন, কার সঙ্গে যোগাযোগ আছে। এমনকি সেনা টহল ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা বিষয়টি খতিয়ে দেখে। শেষ পর্যন্ত জানা যায়, তাঁরা ভারতের নাগপুরের হিন্দু ধর্মগুরুদের অনুসারী, শুধুই ধর্মপ্রচারক। সব প্রমাণ যাচাইয়ের পর তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। তবুও, ঘটনাটি থেমে থাকেনি এখানেই—সংবাদ পৌঁছে যায় প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে। যদিও খোয়াই পুলিশ প্রশাসন শেষ পর্যন্ত থানার অভ্যন্তরেই জল খাবারের ব্যবস্থা করে সাধু-সন্তদের মন জয় করার চেষ্টা করেন।
আজ জনমনে প্রশ্ন জাগছে, “যেখানে প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে চলাফেরা করছে, সেখানে কেন এই সাধুদের এত প্রশ্নের মুখে পড়তে হলো?” কেউ কেউ বলছেন, এ যেন বিশ্বাসের জায়গায় এক অচেনা অবিশ্বাসের ছায়া। তাঁরা বারবার দাবি করেছেন—“আমরা শুধু ভগবানের নাম ছড়াতে এসেছি।” কিন্তু এই ঘটনার পর তাঁদের সেই শান্তি ও ধর্মপ্রচারের যাত্রা এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ভাবছে সবাই—এ কি কেবল একটি ভুল বোঝাবুঝি, নাকি তার পেছনে লুকিয়ে আছে ভয়, সন্দেহ আর অবিশ্বাসের বড় গল্প?
