গোপাল সিং, খোয়াই, ০৫ অক্টোবর || ৬ই অক্টোবর, কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা—বাঙালির অন্যতম শ্রদ্ধা ও ঐতিহ্যের দিন। সেই উপলক্ষে জেলা সদর শহর খোয়াইয়ের সুভাষপার্ক ও আশপাশের বাজার এলাকাগুলো আজ সন্ধ্যা থেকেই ভিড়ে ঠাসা। পুজোর একদিন আগে কেনাকাটার হিড়িকে শহরের প্রতিটি রাস্তা যেন পরিণত হয়েছে মেলা প্রাঙ্গণে।
দিনভর বইমেলা মাঠে চলেছে লক্ষ্মীমূর্তি কেনার ধুম, আর সন্ধ্যা গড়াতেই বাজারে ভিড় বেড়ে দাঁড়িয়েছে চরমে। তবে জিনিষপত্রের অগ্নিমূল্য গৃহস্থের পকেট খালি করেছে। এদিকে খোয়াই শহরের প্রাণকেন্দ্র সুভাষপার্ক, আজ যেন হয়ে উঠেছে উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু—মানুষ ও যানবাহনের প্রতিযোগিতায় তৈরি হয়েছে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি।
তবে, উৎসবের আনন্দের মাঝেই চোখে পড়ছে খোয়াই শহরের নিত্যদিনের অব্যবস্থার চিত্র। প্রায় দুই দশক আগে তৈরি হওয়া শহরের সরু রাস্তা এখনকার গাড়ি, বাইক, স্কুটি ও টমটমের আধিক্যে একেবারে অচল হয়ে পড়েছে। জনসংখ্যা যেমন বেড়েছে, তেমনই বেড়েছে যানবাহনের সংখ্যা—কিন্তু রাস্তাঘাটের চেহারায় আসেনি প্রয়োজনীয় পরিবর্তন।
পথচারীদের হাঁটার জায়গা নেই বললেই চলে। শহরের ফুটপাত আজ ব্যবসায়ীদের দখলে, ফলে মানুষ বাধ্য হয়ে চলাচল করছে মূল রাস্তাতেই। দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রতিদিন বাড়ছে। তার ওপর বাজার এলাকায় পর্যাপ্ত পার্কিংয়ের অভাবে ব্যক্তিগত যানবাহনগুলো দাঁড়াচ্ছে “নো-পার্কিং” জোনেই, যা যানজটের মাত্রা আরও বাড়িয়ে তুলছে।
একই সঙ্গে শহরের রাস্তাঘাটের করুণ অবস্থাও প্রকাশ্যে এসেছে পুজোর প্রস্তুতির সময়। বড় বড় গর্তগুলো সাময়িকভাবে মেরামত করা হলেও, কয়েক দিনের মধ্যেই রাস্তার আসল চেহারা আবার ফিরে আসে। শহরের অধিকাংশ অভ্যন্তরীণ পথ এখন কঙ্কালসার।
স্থানীয় জনসাধারণের দাবি, খোয়াইয়ের মানুষের জীবনযাত্রায় যতই পরিবর্তন এসেছে, শহরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ততই পিছিয়ে পড়েছে। বর্তমান যুগের চাহিদা মেনে রাস্তা প্রশস্তকরণ, পার্কিং জোন তৈরি, ফুটপাত সংস্কার এবং ট্রাফিক ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ এখন সময়ের দাবি।
পুজোর আনন্দের ভিড়ে তাই একটাই প্রশ্ন ঘুরছে খোয়াইবাসীর মুখে—“আভান্তরীন পরিকাঠামোগত দিক দিয়ে খোয়াইয়ের অগ্রগতির শুরুটা কখন হবে?’ জনগণের প্রত্যাশা, প্রশাসন এবার অন্তত এই বাস্তব সমস্যাগুলির দিকে নজর দিক—যাতে খোয়াই শহর সত্যিই হয়ে উঠতে পারে এক আধুনিক, পরিকল্পিত এবং পথচারীবান্ধব শহর।
