কৃতী ছাত্রীদের উৎকর্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দু’দিনব্যাপী ‘কিশোরী উৎকর্ষ মঞ্চ’ অনুষ্ঠানের সূচনা

mlaগোপাল সিং, খোয়াই, ০৬ জানুয়ারী ৷৷ খোয়াই জেলার কৃতী ছাত্রীদের উৎকর্ষতা বৃদ্ধি ও সচেতন করে তোলার লক্ষ্যে রামসা’র উদ্যোগে দুদিনব্যাপী জেলা ভিত্তিক ‘কিশোরী উৎকর্ষ মঞ্চ’ অনুষ্ঠানের সূচনা হল শুক্রবার। নবনির্মিত খোয়াই টাউন হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জেলার ৪ শতাধিক ছাত্রী উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে টাউন হলের অধিকাংশ আসনই ছিল ফাঁকা। ফাঁকা হলেই শুরু হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের নামে সরকারী অর্থের আদ্যশ্রাদ্ধ। এই অনিয়ম দেখে আয়োজকদের উদ্দেশ্যে খানিকটা ক্ষোভের সুরেই আলোচনা করতে গিয়ে উদ্বোধক তথা বিধায়ক বিশ্বজিৎ দত্ত বলেন, আয়োজকরা যদি একটা সেমিনারের মতো করে একজন চিকিৎসক, একজন পুলিশ আধিকারিক এবং কিশোরীদের এডুল্যাসেন্স অবস্থার বিষয়ে আলোচনা করা জন্য একজন শিক্ষাবিদ এবং আর্থিক যোজনা সম্পর্কে আলোচনা করার জন্য একজন ব্যাঙ্ক এর অধিকর্তাকে উপস্থিত করানো যায় তবে এর মধ্য দিয়ে কিশোরীদের উৎকর্ষতা বিকাশের ক্ষেত্রে এর সহায়ক হবে। রাষ্ট্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা অভিযান প্রকল্পে খোয়াই জেলা শিক্ষা দপ্তরের ব্যবস্থাপনায় শুক্রবার খোয়াইয়ের নবনির্মিত অত্যাধুনিক টাউন হলে অনুষ্ঠিত খোয়াই জেলা ভিত্তিক ‘কিশোরী উৎকর্ষ মঞ্চ’ অনুষ্ঠানের সূচনা করে এই অভিমত ব্যক্ত করলেন উদ্বোধক তথা বিধায়ক বিশ্বজিৎ দত্ত। উক্ত অনুষ্ঠানে দেখা গেল কিভাবে সরকার প্রদত্ত টাকার অপব্যবহার করে পার পেয়ে যাচ্ছে দূষনমুক্ত সরকারী কর্মচারীগন। যেখানে সরকার ব্যায় সংকুচন নীতির দিকে এগুচ্ছে সেই জায়গায় ব্যায়ের বাহার। বর্তমানে প্রায় ৯০ ভাগ অনুষ্ঠানেরই অনুষ্ঠান মঞ্চকে রাজনৈতিক মঞ্চ বানিয়ে গৌর সেনদের সহানুভূতি পেতে মরিয়া। কারন গৌর সেনগন যদি খুশি থাকে তবেই চলে। অনুষ্ঠানের গুনগতমান যেমন খুশি হউক। তবে বর্তমান বিধায়ক বিশ্বজিৎ দত্ত মহাশয় একটু অন্য ভাবনা চিন্তার মানুষ। নবনির্বাচিত বিধায়ক এর হাত ধরে যতগুলি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন হয়েছে সেই সমস্ত অনুষ্ঠানের যতপ্রকার ত্রুটি বিচ্যুতি আছে তিনি সব তুলে ধরে সমালোচনা করেন যাতে করে আগামী দিনে সঠিক পথে সঠিক দিশা পায় এসমস্ত কর্মসূচী। আজকের ভাষনেও তা পরিস্কার ছিল। তিনি উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন ত্রুটির দিকগুলি সুন্দরভাবে তুলে ধরেন আজ।
যদিও এদিনকার অনুষ্ঠানে আয়োজকদের দেওয়া তথ্য মতে ৪ শতাধিক ছাত্রীর উপস্থিত হবার কথা। কিন্তু অধিকাংশ আসনই ছিল এদিন ফাঁকা। মূলত এই অনুষ্ঠানটি ২০১৬ সালে সম্পন্ন হবার কথা থাকলেও আয়োজকদের মতে বিভিন্ন সমস্যা এবং বার্ষিক পরীক্ষার কারনে তা পিছিয়ে যায়। উদ্বোধনী ভাষনে এমনটাই জানালেন আয়োজক কমিটির কনভেনার চন্দ্রলেখা দেববর্মা। তিনি জানান, বিগত শিক্ষাবর্ষে যেসকল শিক্ষার্থীরা নবম ও দশম শ্রেনীর বার্ষিক পরীক্ষায় ৫০ শতাংশ বা তারও বেশী নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিল সেই সকল ছাত্রীদের নিয়েই দু’দিনব্যাপী জেলা ভিত্তিক ‘কিশোরী উৎকর্ষ মঞ্চ’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র শিক্ষাগত দিক দিয়েই মেধাবী নয়, এর পাশাপাশি বিভিন্ন সহ পাঠ্যক্রমিত কার্যাবলী যেমন নৃত্য, সঙ্গীত, আবৃত্তি, খেলাধূলা, যোগা বা আত্মরক্ষার কৌশল অবলম্বনের দিক দিয়ে পারদার্শীতা অর্জন করে থাকে। বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় কোন অংশেই মেয়েরা বা ছাত্রীরা পিছিয়ে নেই। জেলার সমস্ত মেধাবী ছাত্রীদের দক্ষতা প্রদর্শন হবে এই দু’দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। এর থেকে ২৫ জন যাবে রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতায়। যদিও গোটা অনুষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে যে কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে তা স্বীকার করে নিয়ে অনুষ্ঠান পরিচালনায় সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
অপরদিকে বিধায়ক বিশ্বজিৎ দত্ত উনার আলোচনায় বলেন, এই অনুষ্ঠানের সূচনার মধ্য দিয়ে খোয়াই জেলায় একটা ইতিহাস রচনা হতে যাচ্ছে। সকলেই এর সাক্ষী রইল। তবে আগামী বছর আগে থেকেই যেন উদ্যোক্তা কমিটি পরিকল্পনা নিয়ে সময় মতো যেন অনুষ্ঠান করা যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখার কথা বলেন। কারন জেলা ভিত্তিক ‘কিশোরী উৎকর্ষ মঞ্চ’ অনুষ্ঠানটি ২০১৬ শিক্ষাবর্ষের। উদ্যোক্তাদের মতে বিভিন্ন কারনে তা সময় মতো করানো যায়নি। তবে যাইহোক বিধায়ক বিশ্বজিৎ দত্ত এবিষয়ে আলোকপাত করেন এবং আগামী বছর সময়মতো অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন করার পরামর্শ দেন। পাশাপাশি তিনি বলেন যদি সময়ের কাজ সময়ে না হয় তবে তা আঁধারে হাবুডুবু খাবে। তবে ইদানিংকালে সারা রাজ্যের সাথে খোয়াই জেলার কিশোরীদের সঙ্গীত, নৃত্য, যোগা, খেলাধূলা ইত্যাদি বিষয়ে পারদর্শিতার নিদর্শন দেখা যাচ্ছে বলেও উষ্মা প্রকাশ করেন বিধায়ক বিশ্বজিৎ দত্ত। তিনি আনন্দের সাথে জানান যে তেলিয়ামুড়ার কিশোরীরা এশিয়ার মহাদেশ থেকে শিরোপা ছিনিয়ে এনেছে। এটা খুবই গর্বের বিষয়। তাই তিনি করতালির মাধ্যমে কিশোরীদের উৎসাহ প্রদান করেন। হল ভরে উঠে করতালিতে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এছাড়াও আলোচনা করেন খোয়াই জিলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি বিদ্যুৎ ভট্টাচার্য্য সহ অন্যান্যরা। খোয়াই জেলা ভিত্তিক ‘কিশোরী উৎকর্ষ মঞ্চ’ অনুষ্ঠানে এদিন অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খোয়াই জিলা পরিষদের সহ-সভাপতি বিদ্যুৎ ভট্টাচার্য্য, পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন শুক্লা সেনগুপ্তা, বিধায়িকা গৌরী দাস, গণকী দ্বাদশ শ্রেনী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তথা কনভেনার চন্দ্রলেখা দেববর্মা প্রমুখ। এছাড়া খোয়াই জেলার বিভিন্ন স্কুলের ৯ম ও ১০ম শ্রেনীর ছাত্রীদের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে টাউন হলের অধিকাংশ আসনই ছিল ফাঁকা।
FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*