বিপুল কান্তি সাহা চারু ও কারুকলা উৎসবের উদ্বোধন করে ক্যানভাস শিল্পকর্ম তৈরি করলেন মুখ্যমন্ত্রী

আপডেট প্রতিনিধি, আগরতলা, ০৫ এপ্রিল || ৫ই এপ্রিল, ২০২৫ ত্রিপুরার সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের জন্য এক ঐতিহাসিক দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়। শনিবার রাজধানীর লিচুবাগানস্থিত সরকারি চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়ে বিপুল কান্তি সাহা রাজ্য চারু ও কারুকলা উৎসবের উদ্বোধন করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মাণিক সাহা। উৎসবের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের পর মুখ্যমন্ত্রীকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়।
এদিন শিল্প ও কারুশিল্পের এই উজ্জ্বল উদযাপনে একত্রিত হয়েছেন প্রতিভাবান কারিগর, স্থানীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক অনুরাগীরা, যা রাজ্যের সমৃদ্ধ শিল্প ঐতিহ্য তুলে ধরে।
এদিন এই অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরে অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য, রাজ্য সাংস্কৃতিক সচিব সুব্রত চক্রবর্তী সহ রাজ্যের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “শিল্প-সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষক ত্রিপুরার পূণ্যভূমিকে আপন করে বড়ো হয়েছেন অসংখ্য কৃতি শিল্পী, ভাষ্কর ও সাহিত্যিক। শচীন দেববর্মণ কিংবা অদ্বৈত মল্লবর্মণের মতো আরেকটি উজ্জ্বল নাম ত্রিপুরা থেকে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত ভাষ্কর বিপুল কান্তি সাহা। এই কৃতি ব্যাক্তিত্বকে স্মরণ করে এবছর থেকে রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের ব্যবস্থাপনায় শুরু হচ্ছে ‘বিপুল চারু ও কারুকলা উৎসব’।”
তিনি ত্রিপুরার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও প্রচারের গুরুত্ব তুলে ধরেন। স্থানীয় শিল্পী ও কারিগরদের কাজ প্রদর্শনের জন্য রাজ্য ও জেলা স্তরে একটি মঞ্চ প্রদানে সরকারের প্রতিশ্রুতির উপর জোর দেন। মুখ্যমন্ত্রী বিখ্যাত ভাস্কর বিপুল কান্তি সাহার প্রতিও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন, যার ভারতীয় শিল্পে অবদান সুপ্রলেখিত।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী আরও জোর দিয়ে বলেন যে, সঙ্গীত নাটক একাডেমি, ললিত কলা একাডেমি এবং সাহিত্য একাডেমির মতো প্রতিষ্ঠানগুলি আধুনিক কালে শিল্প, কারুকলা ও শিল্পীদের বিকাশের সুযোগ সৃষ্টি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই প্রতিষ্ঠানগুলি রাজ্যের শিল্প প্রতিভাকে লালন-পালন ও প্রচার করতে অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে এবং তাদের অবদান ত্রিপুরার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বিকাশ ও সংরক্ষণের জন্য অত্যাবশ্যক।
উৎসবে রাজ্যের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য প্রদর্শিত করে চিত্রকলা ও কারুশিল্পের বিভিন্ন প্রদর্শনী অন্তর্ভুক্ত ছিল। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন এবং একটি ক্যানভাস শিল্পকর্ম তৈরি করেন, যা উদযাপনের সুর নির্ধারণ করে।
বিপুল কান্তি সাহা রাজ্য চারু ও কারুকলা উৎসব ত্রিপুরার শিল্প ও কারুশিল্প ক্ষেত্রের জন্য এক নতুন যুগের সূচনা করবে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, এখন থেকে প্রতি বছর এই অনুষ্ঠান রাজ্য এবং জেলা স্তরে আয়োজিত হবে, যা স্থানীয় শিল্পী ও কারিগরদের জন্য উল্লেখযোগ্য উৎসাহ প্রদান করবে। এই নিয়মিত আয়োজন শুধুমাত্র রাজ্যের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে প্রচার করবে না, অঞ্চলের অর্থনৈতিক বিকাশেও দীর্ঘমেয়াদি অবদান রাখবে।
উৎসব যেমন ত্রিপুরার শিল্প প্রতিভা প্রদর্শন করতে থাকে, এটি স্পষ্ট যে রাজ্যের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ভালো হাতে রয়েছে। সঙ্গীত নাটক একাডেমি, ললিত কলা একাডেমি এবং সাহিত্য একাডেমির মতো প্রতিষ্ঠানগুলির সহযোগিতায় এই ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও প্রচারে সরকারের প্রতিশ্রুতি অবশ্যই রাজ্যের শিল্প পরিদৃশ্যে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলবে। বার্ষিক রাজ্য ও জেলা স্তরের অনুষ্ঠান আয়োজনের এই সিদ্ধান্ত স্থানীয় শিল্প ও সংস্কৃতিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*